গীবত একটি কবীরা গোনাহ পর্ব-১ | im hridoy 71

গীবত একটি কবীরা গোনাহ | পর্ব-১

মুফতী মাহদী হাসান

অন্যের কাছে কারো দোষ চর্চা করাকে গীবত বলে যা উক্ত ব্যক্তি শুনতে লজ্জাবোধ করে। মানুষের স্বভাব হচ্ছে, দুজন একত্র হলে গল্পগুজবে জড়িয়ে যায়। যার বিরাট এক অংশ থাকে অপরের খারাপ দিক গুলোর আলোচনা।


ভুল ধারণাঃ অনেকে গীবত করে একথা বলে থাকে যে, আমি এ কথা তার সামনেও বলতে পারব। একথার দ্বারা মূলত গীবতের বৈধতার স্বীকৃতি দেওয়ার চেষ্টা করা হয়। সামনে বলে কষ্ট দেওয়াটাও গীবতের মতো কবীরা গোনাহের অন্তর্ভুক্ত। কেননা, তা হচ্ছে মুসলমান ভাইকে কষ্ট দেওয়া। আর তার অনুপস্থিতিতে বললে তো গীবতই। (রুহুল মাআনী, সূরা হুজুরাত: ১২) কেউ কেউ মনে করে যে, আমি তো বাস্তব কথাই বলছি। যারা এরূপ ধারণা নিয়ে কারো দোষের প্রকাশ করেন, তারাই গীবত করেন। কারণ, বাস্তব হলেই তা গীবত হয়। আর বাস্তব না হলে তা হবে অপবাদ। যা গীবতের চেয়েও মারাত্মক গোনাহ। হাদীসে পাকে তাকে হারাম ও কবীরা গোনাহ সাব্যস্ত করা হয়েছে। তবে, এ কথাও বলা হয়েছে, যে ব্যক্তি কাউকে অপবাদ দিবে সে মৃত্যুর আগে হলেও ওই অপরাধে লিপ্ত হয়ে যাবে।


গীবতের প্রকারভেদঃ


❖ কারো দৈহিক দোষের কথা আলোচনা করা। যেমন-কাউকে ল্যাংড়া, কুশ্রী, বেটে-খাটো ইত্যাদি বলে সম্বধোন করা।


❖ কারো পোশাক-পরিচ্ছদের দোষ সম্পর্কে আলোচনা করা। যেমন- কারো ব্যাপারে বলা যে, অমুককে এই পোশাকে একটুও মানাচ্ছে না। বা তার পোশাকটা সুন্নতি নয়।


❖ নিজের মর্যাদা বাড়িয়ে বলে অপর কারো মর্যাদাকে ক্ষুণ্ণ করে কথা বলা। বা কারো বংশ নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করা।


❖ অভ্যাস ও চালচলন সম্পর্কীয় দোষ নিয়ে কথা বলা। যেমন-এভাবে বলা, সে খাওয়ার সময় আওয়াজ করে খায়। বা ঘুমিয়ে বিকট আওয়াজে নাক ডাকে।


❖ গোনাহ সম্পর্কে পরসমালোচনা করা। যেমন-কারো সম্পর্কে বলা, সে মিথ্যুক, সুদখোর, ঘুষখোর।


মুসলমানের সম্মানহানি করা হারাম

বিদায় হজের ভাষণে মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, তোমাদের রক্ত, তোমাদের সম্পদ, তোমাদের ইজ্জত, তোমাদের উপর হারাম যেমন তোমাদের এই শহরে এই মাসের এই দিনটি হারাম। (সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১২১৮)

মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, তোমরা মুসলমানদের গীবত করো না। তাদের দোষ অন্বেষণ করো না। কেননা, যে তার ভাইয়ের দোষ অন্বেষণ করে বেড়ায় আল্লাহও তার দোষ-ত্রুটি ক্ষমা করেন না। আর আল্লাহ তা’আলা যার দোষ মার্জনা না করেন, তাকে তিনি ঘরের ভিতর রেখেও লাঞ্ছিত করতে পারেন। (তাফসীরে ইবনে কাছীর, সূরা হুজুরাত ১২)


একজন মুসলমান কাবা ঘরের চেয়েও মূল্যবান

হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর রাযি. বলেন, আমি মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে কাবা শরীফের তাওয়াফরত অবস্থায় বলতে শুনেছি, হে কাবা! কত প্রিয় তুমি এবং তোমার সুগন্ধি! তুমি এবং তোমার মর্যাদা কত উচ্চ! ঐ সত্তার কসম! যার হাতে মুহাম্মদের প্রাণ! মুমিনের মর্যাদা এবং তার রক্ত ও সম্পদ আল্লাহর নিকট তোমার চেয়েও মহান। আর তার প্রতি যেন কেবলই ভাল ধারণা পোষণ করা হয়। (সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস ৩৯৩২)


এ কথা বলার অপেক্ষা থাকে না যে, গীবত করে কোনো মুসলমানের মর্যাদার উপর হামলা করা কাবা শরীফের উপর হামলা করার চেয়েও সাংঘাতিক মন্দ কাজ! পক্ষান্তরে কাবা শরীফের উপর হামলার ইচ্ছা করা আল্লাহর বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করারই নামান্তর। সুতরাং তার পরিণাম হাতির মালিক আবরাহার চেয়ে ভালো কিছু ভাবাই যায় না।


Thanks For You Reading The Post We are very happy for you to come to our site. Our Website Domain name https://imhridoy71.blogspot.com/?m=1.
Newer Posts Newer Posts Older Posts Older Posts

More posts

Comments

Post a Comment