যিলহজের প্রথম দশকের নেক আমল
যিলহজের প্রথম দশকের নেক আমল
মুফতী মনসূরুল হক দা.বা.
১। যিলহজের প্রথম নয় রাতের ইবাদত বন্দেগী লাইলাতুল কদরের রাতের ইবাদত বন্দেগীর সমুতূল্য। তাই এই ৯টি রাতকে কুরআন এবং হাদীসের আলোকে যিলহজ্জ মাসের দশ রাতের ফযীলত সুপ্রমাণিত। কুরআন শরীফে সুরায়ে ফাজরে আল্লাহ তা‘আলা এই দশ রাতের শপথ করে বলেছেন, শপথ দশ রাতের, শপথ যা জোড় ও বেজোড়, শপথ রাতের যখন তা গত হতে থাকে।” এই চারটি আয়াতে আল্লাহ তা‘আলা পাঁচটি বস্তুর শপথ করেছেন।
(১) ফজর ; (২) দশ রাতের ; (৩) জোড়ের ; (৪) বেজোড়ের ; (৫) রাতের।
অধিকাংশ মুফাসসিরীনদের মতে দশ রাত দ্বারা যিলহজ্জের এই দশ রাতকে বুঝানো হয়েছে। একটি মারফু হাদীস দ্বারাও এর সমর্থন পাওয়া যায়। হযরত জাবের রা. থেকে বর্ণিত রাসূলে আকরাম সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন وَلَيَالٍ عَشۡرٖ দ্বারা উদ্দেশ্য হল যিলহজ্জ মাসের প্রথম দশ দিন। তাতে কুরবানির দিনও শামিল।
উল্লেখিত দশ রাত সম্পর্কে হযরত আবু হুরায়রা রা. রাসূলে আকরাম সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে বর্ণনা করেন, তিনি ইরশাদ করেছেন, পৃথিবীর দিন ও রাত্রির মধ্যে আল্লাহ তা‘আলার নিকট তার ইবাদতের জন্য সবচেয়ে প্রিয় হল যিলহজ্জের প্রথম দশ দিন, এই গুলির তুলনায় ইবাদতের জন্য প্রিয় আর কোন দিন নেই। এই দিন গুলির এক একটি রোযা এক বৎসর রোযা রাখার সমতুল্য, আর ঐ রাতগুলির এক একটির ইবাদত শবে কদরের ইবাদতের সমতুল্য। (ফাযাইলুল আওকাত লিল বাইহাকী-৩৪৬, শুআবুল ঈমান, ৩/৩৫৫)
হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলে আকরাম সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন, এই দশ দিনের নেক আমল আল্লাহ তা‘আলার নিকট যতটা পছন্দনীয় অন্যদিনের আমল ততটা নয়। (বুখারী শরীফ)
এসব হাদীস দ্বারা আমরা যিলহজ্জের প্রথম দশ দিন ও রাতের ফযীলত সম্পর্কে অবগত হতে পারলাম। হযরত হাফসা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, চারটি বিষয় এমন যেগুলিকে রাসূলে আকরাম সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম কখনও ছাড়তেন না। আশুরার রোযা, যিলহজ্জের প্রথম দশকের রোযা, প্রত্যেক মাসের তিন দিনের রোযা এবং ফজরের পূর্বের দুই রাকাআত সুন্নাত। (নাসাঈ শরীফ, মিশকাত-১৮০)
আলোচ্য হাদীসে যিলহজ্জের প্রথম দশক বলতে এখানে নয় দিনকে বুঝানো হয়েছে। কেননা অন্য এক হাদীসে দশ তারিখে ঈদের দিনে রোযা রাখতে নিষেধ করা হয়েছে।
.
শেয়ার করুন, বন্ধুদের সাথে ইন শা আল্লাহ !
মুফতী মনসূরুল হক দা.বা.
প্রধান মুফতী ও শাইখুল হাদীস,
জা'মিআ রাহমানিয়া মাদ্রাসা,ঢাকা।
Comments